19
বন্ধুরা আজ অনেকদিন পর আবার আমি এসেছি একটি কবিতা আবৃতি নিয়ে। আমি আসলে সৌখিন আবৃত্তিকার। আমি কখনো আবৃত্তি শিখিনি কোথাও, তবে শখের বসে নিজে নিজে আবৃত্তি করি।
আসলে কবিতা আবৃত্তি না করে পড়লে কবিতার আসল মজা পাওয়া যায় না। তাই ছোটবেলা থেকেই আমি যখনই কবিতা পড়ি, তখনই উচ্চারণ করে জোরে জোরে পড়ি। এতে কবিতার আসল মজাটা পাওয়া যায়।
আজকে আমি আবৃত্তি করব আমার খুব প্রিয় একটি কবিতা, কবি সিকান্দার আবু জাফর রচিত বাংলা ছাড়ো..
এটি একটি দেশাত্মবোধক কবিতা, যেখানে কবির অপরিসীম দেশপ্রেম ফুটে উঠেছে। পাশাপাশি দেশদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কবি তীব্র প্রতিবাদ ও এবং ঘৃণা বর্ষণ করেছেন কবিতার প্রত্যেকটি লাইনে লাইনে।
আসুন উপভোগ করি কবিতাটি..
রক্তচোখের আগুন মেখে ঝলসে-যাওয়া
আমার বছরগুলো
আজকে যখন হাতের মুঠোয়
কণ্ঠনালীর খুন পিয়াসী ছুরি,
কাজ কি তবে আগলে রেখে বুকের কাছে
কেউটে সাপের ঝাঁপি !
আমার হাতেই নিলাম আমার
নির্ভরতার চাবি;
তুমি আমার আকাশ থেকে
সরাও তোমার ছায়া,
তুমি বাংলা ছাড়ো।
অনেক মাপের অনেক জুতোর দামে
তোমার হাতে দিয়েছি ফুল
হৃদয়-সুরভিত
সে-ফুল খুঁজে পায়নি তোমার
চিত্তরসের ছোঁয়া,
পেয়েছে শুধু কঠিন জুতোর তলা।
আজকে যখন তাদের স্মৃতি
অসম্মানের বিষে
তিক্ত প্রাণে শ্বাপদ নখের জ্বালা,
কাজ কি চোখের প্রসন্নতায়
লুকিয়ে রেখে প্রেতের অট্টহাসি !
আমার কাঁধেই নিলাম তুলে
আমার যত বোঝা;
তুমি আমার বাতাস থেকে
মোছো তোমার ধুলো,
তুমি বাংলা ছাড়ো।
একাগ্রতার স্বপ্ন বিনিময়ে
মেঘ চেয়েছি ভিজিয়ে নিতে
যখন পোড়া মাটি
বারেবারেই তোমার খরা
আমার ক্ষেতে বসিয়ে গেছে ঘটি।
আমার প্রীতি তোমার প্রতারণা
যোগ-বিয়োগে মিলিয়ে নিলে
তোমার লোভের জটিল অঙ্কগুলো
আমার কেবল হাড় জুড়ালো
হতাশ্বাসের ধুলো।
আজকে যখন খুঁড়তে গিয়ে
নিজের কবরখানা
আপন খুলির কোদাল দেখি
সর্বনাশা বজ্র দিয়ে গড়া,
কাজ কি দ্বিধায় বিষণ্নতায়
বন্দী রেখে ঘৃণার অগ্নিগিরি !
আমার বুকেই ফিরিয়ে নেব
ক্ষিপ্ত বাজের থাবা;
তুমি আমার জলস্থলের
মাদুর থেকে নামো,
তুমি বাংলা ছাড়ো।
(বাংলা ছাড়ো- সিকান্দার আবু জাফর)
Comments:
Reply:
To comment on this video please connect a HIVE account to your profile: Connect HIVE Account